| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইমাম ও খতীব সংস্থার জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত 


ইমাম ও খতীব সংস্থার জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত 


রহমত নিউজ     03 November, 2024     11:47 PM    


জাতীয় ইমাম ও খতীব সংস্থা বাংলাদেশ এর উদ্যোগে ‘ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গঠনে ইমাম ও খতীবদের করণীয় শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ রবিবার (৩ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবর ভি আি পি লাউঞ্জে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ইসলাম যেমনিভাবে একজন ইমাম ও খতীবকে মযার্দা দিয়েছে তেমনিভাবে আমাদের সমাজের সাধারণ মুসলমানগণও ইমাম ও খতীবদেরকে অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখে থাকে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের প্রচলিত রাষ্ট্র কাঠামোয় মানুষের ব্যক্তি জীবনের যে কোনো বিষয়ে ইমাম-খতীবদের মতামতকে যেমন গ্রহণ করা হয় তেমনিভাবে  সামাজিক অন্যান্য ক্ষেত্রে ইমাম-খতীবদের মতামতকে মূল্যায়ন করা হয়না। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ইমাম খতীবরাই বরং সমাজে সবচেয়ে অধিক বৈষম্যের শিকার। সুতরাং বৈষম্যহীন, ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গঠন করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন সামাজিক যে কোনো বিষয়ে ইমাম ও খতীবদের মতামতকে অগ্রাধিকার দেওয়া। পাশাপাশি ইমাম ও খতীবদের করণীয় হলো, ইনসাফ কায়েম করার ক্ষেত্রে কোরআন ও সুন্নাহর যে সমস্ত বিধি বিধানগুলো রয়েছে তা যথাযথভাবে সাধারণ জনগনের সামনে তুলে ধরা।  

ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, জাতির এ ক্রান্তিলগ্ন ও দুর্দিনে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে জাতীয় ইমাম ও খতীব সংস্থা বাংলাদেশের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। 

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, মসজিদ আল্লাহর পবিত্র ঘর, এবাদত বন্দেগীর স্থান। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মসজিদ থেকে রাষ্ট্রও পরিচালনা করেছেন। মানুষের সমস্যা গুলোর সমাধান মসজিদেই করতেন। কিন্তু বর্তমানে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেক্রেটারি দ্বীনদার না হওয়ায়, অধিকাংশদের কোরআন হাদিসের জ্ঞান না থাকায় ইমাম এবং খতিবগণ কোরআন হাদিস থেকে সুদ ঘুষ দুর্নীতি মদ জুয়া ব্যভিচার ইত্যাদি অপরাধের বিরুদ্ধে স্বাধীনভাবে বয়ান-বক্তব্য করতে পারছেন না। কারণ এই সকল অপরাধের সাথে কখনো কখনো তারাও জড়িত। এজন্য প্রয়োজন মসজিদ কমিটির সভাপতি সেক্রেটারি দ্বীনদার হওয়া, পাক্কা নামাজী হওয়া। ইমামের অনুপস্থিতিতে নামাজের ইমামতি করতে পারে সে ধরনের যোগ্যতা সম্পন্ন হওয়া। কি কি গুণাবলী থাকলে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেক্রেটারি হতে পারবে তা নির্ধারণ করার জন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টার কাছে দাবি জানান। স্কুল-কলেজ কমিটির সভাপতি সেক্রেটারি হতে হলে কিছু নির্ধারিত গুণাবলী থাকতে হয়। তা হলে মসজিদ কমিটির সদস্যদের গুণাবলী থাকবে না কেন?


 মাওলানা হামিদী আরো বলেন, পৃথিবীতে মানব সভ্যতার পরিবর্তনের জন্য অনেক আইন ও মতবাদ রচিত হয়েছে। কিন্তু কেউ শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। মানবতার মুক্তিরদূত মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ ছিলেন গোটা মানবজাতির প্রতি রহমত। মুসলিম উম্মাহর জীবন পরিচালনার একমাত্র আদর্শ। নবীজী সাঃকে অনুসরণের মধ্যেই মানবতার কল্যাণ নিহিত। সারাবিশ্ব আজ শান্তি ও ন্যায়বিচারের জন্য হাহাকার করছে। অথচ চৌদ্দ শ'বছর আগে বিশ্বনবী সাঃ গোটা দুনিয়ায় শান্তির প্রতিষ্ঠা করে দেখিয়ে গেছেন যে, কোরআন হাদিসের অনুসরণই দুনিয়ায় শান্তি ও পরকালীন মুক্তির গ্যারান্টি দিতে পারে।

মাওলানা হামিদী ইনসাফ কায়েমে কোরআন-সুন্নাহর বিধানগুলো জনগনের সামনে তুলে ধরতে ইমাম ও খতীবদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, যার যা হক বা প্রাপ্য তাকে তা যথাযথভাবে দেয়াকে ইনসাফ বা ন্যায়পরায়ণতা বলা হয়। আর তার চেয়ে কম দেয়া জুলুম বা অবিচার, যা ইসলামে হারাম। ইসলামে ইনসাফ ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব বেশি। অমুসলিমদের সাথেও ইনসাফ করার আদেশ রয়েছে। অতএব ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হলে অধিকার আদায়ে মুসলিম ও অমুসলিম কারোর আন্দোলন সংগ্রাম করার প্রয়োজন হবে না। সকলেই ন্যায্য অধিকার পাবে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ইমাম-খতীবগণ বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অর্জিত বাংলাদেশে ইনসাফ, ন্যায় বিচার ও মানুষের অধিকার সুষম বণ্টনে ইমাম-খতীবদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে, কিন্তু এ দায়িত্ব পালনে ইমাম-খতিবগণ ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালীদের আধিপত্যের কারণে বার বার ব্যর্থ হয়, তাই আমরা চাই ইমামগণ যেনো স্বাধীনভাবে কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে সমাজ বিনির্মানের লক্ষ্যে নির্দিধায় ধর্মের মৌলিক কথাগুলো মানুষের মাঝে তুলে ধরতে পারে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ হতে যেনো একটি পরিপত্র জারি করা হয়। 

আয়োজিত সম্মেলনে জাতীয় ইমাম ও খতীব সংস্থা বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি আবু তাহের আল মাদানীর সভাপতিত্বে ও সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমাদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন সংস্থা বাংলাদেশের সভাপতি হাফেজ মাওলানা তৈয়ব, মাওলানা আতাউর রহমান আতিকী, মাওলানা ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, মুফতি আখতারুজ্জামান আশরাফী,মাওলানা আলাউদ্দিন নূরী প্রমূখ।